দাদ — নামটা শুনলেই অনেকে ঘৃণা বা আতঙ্ক অনুভব করেন। এটি একটি ছোঁয়াচে চর্ম রোগ, যা শরীরের যেকোনো জায়গায় হতে পারে। অনেকেই একে ব্যাকটেরিয়াজনিত ভাবলেও, আসলে এটি একটি ছত্রাক (fungus) দ্বারা সৃষ্ট রোগ।
🔍 দাদ কীভাবে চিনবেন?
দাদ সাধারণত ত্বকে গোলাকৃতি লালচে চাকা আকারে দেখা যায়। এর চারপাশ একটু উঁচু হয় এবং মাঝখানটা অপেক্ষাকৃত স্বাভাবিক দেখায়। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
- গোল বা বৃত্তাকারে লালচে দাগ
- চুলকানি ও জ্বালাভাব
- কখনো চুল পড়াও দেখা যায় (যদি মাথায় হয়)
- ত্বক শুকনো ও খোসপড়া ভাব
🧬 দাদ ছড়ায় কীভাবে?
দাদ অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ। এটি ছড়াতে পারে:
- একজন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে
- আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত পোশাক, তোয়ালে, চিরুনি বা বিছানার চাদর ব্যবহার করলে
- গৃহপালিত পশু (বিশেষ করে বিড়াল ও কুকুর) থেকেও
- ঘামে ভেজা বা আর্দ্র জায়গায় দীর্ঘক্ষণ থাকলে
🛡️ প্রতিরোধে যা করবেন
দাদ প্রতিরোধ সহজ, যদি কিছু অভ্যাস মেনে চলা যায়:
- নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন
- ঘামযুক্ত পোশাক তাড়াতাড়ি বদলান
- অন্যের তোয়ালে, কাপড় বা চিরুনি ব্যবহার না করুন
- পোষা প্রাণীদের পরিচ্ছন্ন রাখুন
- শরীর শুকনো রাখুন — বিশেষ করে আর্দ্র স্থান যেমন বগল, কুঁচকি
💊 চিকিৎসা কী?
দাদের চিকিৎসা সাধারণত সহজ। প্রথম অবস্থায় অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম বা মলম ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে পুরনো বা ছড়িয়ে পড়া দাদের ক্ষেত্রে মুখে খাওয়ার ওষুধও লাগতে পারে। নিজে ওষুধ না নিয়ে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দেখানো সবচেয়ে ভালো।
⚠️ ভুল ধারণা এড়িয়ে চলুন
অনেকেই মনে করেন দাদ কেবল গরিব বা অপরিচ্ছন্ন মানুষের রোগ — এটি ভুল। যে কেউই আক্রান্ত হতে পারেন, যদি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে থাকেন। তাই সচেতন থাকুন, সাবধানতা অবলম্বন করুন।
📌 শেষ কথা
দাদ একটি অস্বস্তিকর ও দৃশ্যত বিরক্তিকর রোগ হলেও এটি চিকিৎসাযোগ্য এবং প্রতিরোধযোগ্য। তবে সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি অন্যান্যদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই লজ্জা নয়, সচেতন হোন — সুস্থ থাকুন।
আপনার অভিজ্ঞতা বা মতামত নিচে কমেন্ট করে জানান। আরও এমন স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক ব্লগ পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।